বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বাসর রাতে অষ্টাদশী এক নববধূকে একাধিকবার ধর্ষণের মতো কুৎসিত ঘটনা ঘটেছে। অবিশ্বাস্য শোনালেও ধর্ষণে সহায়তা করেছে স্বামী নিজেই। ধর্ষণকারী আর কেউ নয়, স্বামীর দুলাভাই। ন্যাক্কারজনক এই ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর মূল আসামীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে শুক্রবার, ২২ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রধান আসামী সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভুরভুরিয়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন (৩০)। ইতোমধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে ধুনট থানা থেকে আদালতের মাধ্যমে তাকে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধর্ষণের শিকার নববধূ (১৮) ধুনট উপজেলার বিশ্বহরিগাছা গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে। একই এলাকায় সরোয়া পাচথুপি গ্রামের ফেরদৌস আলমের ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে গত ২৩ মার্চ মেয়েটির বিয়ে হয়।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে একইদিন নববধূকে তার বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুড় বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে নববধূকের নিয়ে স্বামী ফরিদুল বাসর ঘরে প্রবেশ করে। এসময় ফরিদুলের বোনের জামাই আলমগীর হোসেন সরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নববধূকে খাওয়ায়।
কিছুক্ষণ পরই বাসরঘরের বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন নববধূ। পরে মানসিক প্রতিবন্ধী ফরিদুলের সহযোগিতায় আলমগীর হোসেন সকাল পর্যন্ত নববধূকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
পরদিন ২৪ মার্চ ভোর ৬টার দিকে নববধূ ঘুম থেকে উঠে দেখেন, আলমগীর হোসেন তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছেন। আর তার স্বামী ফরিদুল ঘুমিয়ে আছেন পাশের বিছানায়। নববধূ বিষয়টি তার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে জানালে তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো নববধূকে মারধর করেন।
ঘটনার পর ২৫ মার্চ রাতেও একই কৌশলের আশ্রয় নেন লম্পট দুলাভাই আলমগীর হোসেন। বিষয়টি টের পেয়ে নববধূ তার বাবাকে মোবাইল ফোনে ঘটনাটি জানান। ঘটনা জানার পর তার বাবা মেয়েকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান।
পরবর্তী সময়ে এই ঘটনায় নববধূর বাবা বাদী হয়ে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় দুলাভাই আলমগীর হোসেন, স্বামী ফরিদুল ইসলাম ছাড়াও শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে আসামি করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, মামলা হওয়ার পরপরই ধুনট থানা পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামীকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য জোর তৎপরতা চলছে।
ওসি আরও জানান, ধর্ষণের শিকার নববধূকে শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা।