শীতকালে অলসতা বেড়ে যায় কেন? (ভিডিও)

গ্রীষ্মকালে গরমের কারণে কর্মশক্তি কমে যায় মানুষের। তখন মনে হয়, শীতকালই ভালো। কিন্তু শীতকাল শুরু হলেই দেখা দেয় আরেক সমস্যা। সারাদিন ঘিরে থাকে আলসেমি। ইচ্ছে করে কম্বল বা কম্ফোর্টারের নিচে সারাদিন শুয়ে থাকতে। কাজ-কর্মের স্পৃহা অনেকটাই কমে যায় শীতকালে। অন্যদিকে অলসতার মাত্রা যায় বেড়ে। মনে হয়, কাজকর্ম ফেলে সারাদিন বিছানায় শুয়ে-বসে কাটাতে পারলে কী ভালোই না হতো!
শীতকালে সকালে ঘুম থেকে ওঠাও মহাঝক্কির এক কাজ। প্রায়ই ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যায়। ঘুম থেকে ওঠার পরেও অলসতা কাটতে চায় না। প্রায় সারাদিনই সেই অলসতার রেশ থেকে যায়। চোখ থেকে ঘুম ঘুম ভাব কাটতেই চায় না। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, শীতকালে মানুষের অলসতা বেড়ে যায় কেন? কেনই বা বেশি বেশি ঘুমাতে ইচ্ছে করে? এর জবাব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে প্রায় সবার ভেতরেই এক ধরনের ঘুম-ঘুম ভাব পরিলক্ষিত হয়। মানুষের ঘুমোনোর অভ্যাস নির্ভর করে সার্কেডিয়ান রিদম বা বায়োলজিক্যাল ক্লকের ওপর। এটি একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রতি ২৪ ঘণ্টায় সম্পূর্ণ হয়। অনেকটা পৃথিবী যেমন নিজের কক্ষে ঘোরে ঠিক সেই রকমই প্রাণীদের অস্তিত্বকে এক অদৃশ্য ছন্দে বেঁধে দেয় এই প্রক্রিয়া।
মানবদেহের অভ্যন্তরে থাকা টাইমকিপিং সেল বা কোষের সহায়তায় পরিবেশ বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে শরীর। আর পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে পড়ে আলো, তাপমাত্রাসহ আরও কিছু বিষয়। এই কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য টাইমকিপিং কোষগুলো জাইটগিবার বা টাইম ক্লুয়ের সাহায্য নিয়ে থাকে।
সার্কেডিয়ান প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলে তাপমাত্রা বিশেষ করে ঠান্ডা বা কম তাপমাত্রাসহ আরও কিছু বিষয়। আর এর প্রভাবই পড়ে মানুষের ঘুমের ধরন ও সময়ের উপর।
শীতকালে দিনের আলো কম থাকে ও রাত বড় হয়। এই বিষয়টি মেলাটোনিনের মাত্রার উপর প্রভাব ফেলে। মেলাটোনিন হলো শরীরের সুপ্ত একটি হরমোন। সাধারণত অন্ধকারে এই হরমোন তৈরি করে মস্তিষ্ক। শীতকালে এই হরমোনের তারতম্যের কারণে মানুষের অলসতা বেড়ে যায়। দিন ও রাতের পার্থক্যের কারণে ঘুমের ইচ্ছে বৃদ্ধি পায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রীষ্মকালে মানুষের মস্তিষ্ক বেশি সক্রিয় থাকে। অন্যদিকে শীতকালে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। আর এই বিষয়টিই মানুষের ঘুমের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। শীতকালে ঘুমের ইচ্ছে বেড়ে যায় বলে সারাদিন ধরে বিছানায় শুয়ে আরাম করতে ইচ্ছে করে।
এদিকে স্লিপ এডুকেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সময় বিছানায় থাকলে মানুষের শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত হয়। আর কাজ ফেলে সারাদিন বিছানায় শূয়ে-বসে কাটালে তার প্রভাব মানুষের সার্কেডিয়ান রিদমের ওপরেও পড়ে যার ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়।
comment / reply_from
related_post
Popular Posts
newsletter
newsletter_description