যে দেশে বাজারে মেলে ভার্জিন পাত্রী (ভিডিও)

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য বাজারে যেতেই হয়। মাছ, মাংস, শাক, সবজি থেকে শুরু করে সেলাইয়ের জন্য সুঁই-সুতা, হেঁসেলের হাড়িসহ প্রয়োজনীয় সবই মেলে বাজারে। কিন্তু বিয়ের জন্য ভার্জিন পাত্রীও যে বাজারে পাওয়া যায় তা কি জানেন? অবিশ্বাস্য শোনালেও ঘটনা কিন্তু সত্য। রাজধানী ঢাকায় বউবাজার নামে একটি জায়গা থাকলেও সেখানে বউ বিক্রি হয় না। এই বউবাজারে অতীতে বউ বিক্রি হতো কিনা তা জানা না গেলেও বিশ্বে এমন একটি আজব দেশ রয়েছে যেখানে সত্যি সত্যিই বাজার বসে বউ বিকিকিনির জন্য।
ইউরোপের দেশ বুলগেরিয়ায় বাজারে বিক্রি হয় বিয়ের উপযুক্ত ভার্জিন পাত্রী। বুলগেরিয়ার একটি গ্রামের নাম স্টারা জাগোরা। গ্রাম হলেও সেটির অবস্থান শহরতলিতেই। সেখানেই বসে বউবাজার। বিশাল একটা মাঠ। একদিকে চলে ঘোড়া কেনাবেচা। মাঠের আরেকদিকে লেগে থাকে প্রচুর মানুষের ভিড়। তবে সেখানে চোখে পড়ে না কোনো দোকান। কেউ মিঠাই বেচ না, বেলুনও বিক্রি হয় না। ‘হরেক মাল ১০ টাকা’ গোছের কোনো বিক্রেতার হাকডাকও শোনা যায় না। বাজার বসে ঠিকই, কিন্তু কোনো দোকানপাট থাকে। এমন আবার হয় নাকি! এর চেয়েও বেশি অবাক করে দেয় বাজারে আসা মানুষজনের হাবভাব।
ফুলবাবু সেজে বউবাজারে বউ কিনতে আসেন কেতাদুরস্ত যুবক ক্রেতারা। অন্যদিকে নজরকাড়া রূপে নিজেদের মেলে ধরতে ভারী সাজগোজ করে বাজারে আসেন ভার্জিন তরুণীরা। চোখে না পড়লেও কোথাও যেন অদৃশ্য সাইনবোর্ডে লেখা থাকে বউবাজার!
আজব এই বাজারের বিস্তারিত জানতে হলে আগে শুনতে হবে এর নেপথ্যে থাকা রোমা সম্প্রদায়ের কথা। বুলগেরিয়ার ক্ষুদ্র একটি জনগোষ্ঠীর নাম রোমা। রক্ষণশীল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ তারা। তাদের সংখ্যাটাও খুব বেশি নয়। স্থানীয় ভাষায় তাদের কালাইদঝি বলা হয়। তাম্রকার হিসেবেই বেশি পরিচিতি তাদের। তামা দিয়ে হরেক রকম পণ্য বানানোই তাদের মূল পেশা।
রোমা সম্প্রদায়ের মানুষরা কঠোরভাবে ধর্মীয় আচার পালন করে। জীবনচর্চায় ভীষণ গোঁড়া তারা। তাদের সমাজে ছেলে-মেয়েদের অবাধে মেলামেশার কোনো রকম সুযোগ নেই। ছেলে-মেয়েদের বয়স একটু বাড়লেই নানা ধরনের বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকা পড়ে। মেয়েরা ১৫ বছর পার করলেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। মা-বাবারা সবসময় চিন্তিত থাকেন এই ভেবে যে, এই বুঝি তাদের মেয়ের দিকে কেউ কুনজর দিয়ে দিলো। উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরা মন দেয়া-নেয়াতো দূরের কথা, মিশতেই পারে না।
অবশ্য বিয়ে নামের প্রথাটি চালু আছে রোমা সম্প্রদায়ের ভেতর। কিন্তু তাদের পাত্রী নির্বাচনের রীতি খুবই অদ্ভুত। সেখানে বরের জন্য কনে নির্বাচন করা হয় বাজার থেকে। স্টারা জাগোরা গ্রামে প্রতি বছর চারবার বসে এই বউবাজার। বসন্তকালে দুবার ও গ্রীষ্মকালে দুবার। মা-বাবার সাথে সেজেগুজে বাজারে হাজির হন ভার্জিন তরুণীরা। পাত্রপক্ষের নজর কাড়তে খুবই আকর্ষণীয় রূপে নিজেদের রাঙিয়ে তোলেন পাত্রীরা। তাদের পরনে থাকে ঝলমলে পোশাক, মিনি স্কার্ট আর পায়ে শোভা পায় হাইহিল জুতা। ঠোঁটে কড়া লিপস্টিক, চোখে কাজল, চুলে রঙ-বেরঙের ফিতা আর ক্লিপ পরে পাত্রের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন তারা। হরেক রকমের গয়নাও শোভা পায় তাদের অঙ্গে। প্রতিটি পাত্রীর চাহনিতেই ধরা পড়ে প্রগাঢ় আবেদন।
রোমা সম্প্রদায়ের লোকজনের নিত্যসঙ্গী অভাব। মূলত অভাবের কারণেই এমন অদ্ভুত উপায়ে মেয়ের বিয়ে দেন অভিবাবকরা। নিলামে যে পুরুষ সবচেয়ে বেশি টাকা দেয় তার হাতেই তুলে দেয়া হয় পাত্রীকে। অনেক সময় পাত্র পছন্দ না হলেও বিয়ে করতে বাধ্য হয় মেয়েরা। সারাজীবন অপছন্দের সেই পাত্রের সঙ্গেই কাটিয়ে দিতে হয় জীবন।
comment / reply_from
related_post
Popular Posts
newsletter
newsletter_description