কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী দুজন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান ও ল্যান্সকর্পোরাল মোঃ রবিউল মোল্লাকে মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়েছে।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীদের মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল প্রদান অনুষ্ঠানে এই মেডেল প্রদান করা হয়।
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত মিনুসকা মিশনে মেজর এ কে এম মাহমুদুল হাসান এবং ল্যান্স কর্পোরাল মোঃ রবিউল মোল্লা দক্ষিণ সুদানে আনমিস মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজের কাছ থেকে বাংলাদেশের পক্ষে এ মেডেল গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় শীর্ষ দেশ। বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮০২ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের ৯টি মিশনে কর্তব্যরত রয়েছেন। দায়িত্বরত অবস্থায় এখন পর্যন্ত জীবন উৎসর্গ করেছেন ১৬১ জন বাংলাদেশি।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন শুরু হয়। এর প্রথম মিশন ছিল ১৯৪৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যে ১৯৪৮ আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধের সময় যুদ্ধবিরতি পালন ও বজায় রাখা।
তারপর থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬৩টি মিশনে অংশগ্রহণ করেছে যার ১৭টি আজও অব্যাহত রয়েছে। ১৯৮৮ সালে সংস্থাটি শান্তিতে নোবেল লাভ করে।
জাতিসংঘের চার্টারে শান্তিরক্ষা শব্দটি পাওয়া না গেলেও অধ্যায় ৬ এবং অধ্যায় ৭-এ অনুমোদন আছে বলে মনে করা হয়। অধ্যায় ৬ নিরাপত্তা পরিষদের ক্ষমতার তদন্ত এবং মধ্যস্থতা করার ক্ষমতা বর্ণনা করে।
অধ্যায় ৭ অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সামরিক নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করার ক্ষমতা, সেইসাথে সামরিক বাহিনীর ব্যবহার, বিতর্ক সমাধান করার ব্যাপারে আলোচনা করে।
জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতারা ধারণা করেছিলেন যে, এই সংগঠন জাতিসমূহের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ এবং ভবিষ্যতে যুদ্ধ প্রতিযোধে কাজ করবে। কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধের কারণে বিশ্ব ভাগ হয়ে যায় এবং শান্তিরক্ষা চুক্তি অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।
স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বিশ্ব শান্তি অর্জনের জন্য সংস্থাটি নতুন করে প্রয়োজন হয়। সংস্থাটির শান্তিরক্ষা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায় যা আগের ৪৫ বছরের তুলনায় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে আরও বেশি মিশনকে অনুমোদন করে।